স্টাফ রিপোর্টার::
জামালগঞ্জে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর মধ্যে রাজহাঁস পালনে আগ্রহ বাড়ছে। অনেকেই গড়ে তুলেছেন পারিবারিক রাজহাসের খামার। এটি একদিকে যেমন তাদের পরিবারের চাহিদা পূরণে ভূমিকা রাখে অন্যদিকে বিক্রি করে বাড়তি আয়ের সুযোগ হচ্ছে। কোন ধরনের প্রশিক্ষণ ছাড়াই রাজহাঁস পালন করে অনেক নারীর সংসারে সচ্ছলতা ফিরে এসেছে। জানা যায়, প্রথমে অল্প টাকা পুঁজি নিয়ে কেউ দুইটি, কেউ চারটি হাঁসের বাচ্চা দিয়ে শুরু করেন রাজহাঁস পালন। পরে এই হাঁসের আয় দিয়ে অনেক নারী গড়ে তুলেছেন খামার। প্রতিটি খামারে রয়েছে ২০ থেকে ৫০টি রাজহাঁস। লাভজনক হওয়ায় দিন দিন বাড়ছে এই হাঁসের খামার। ফেনারবাক ইউনিয়নে রামপুর গ্রামের কুলসুম বেগম বলেন, ৫-৬ বছর ধরে রাজহাঁসের খামার গড়ে তুলি। প্রথমে নিজ গ্রাম থেকে দুই দিনের চারটি বাচ্চা কিনে এই বাচ্চা থেকে হাঁস পালন শুরু করি। প্রতিটি বাচ্চা দাম পড়েছে ২শত টাকা। বর্তমানে আমার খামারে রয়েছে ৪০টি রাজহাঁস। একটি রাজহাঁস বছরে ২বার ৮ থেকে ১০টি ডিম দেয়। ডিম থেকে বাচ্চা ফোটার পর দুই দিনের বাচ্চা ২শত থেকে আড়াইশত টাকা বিক্রি করি। একই ইউনিয়নের সুজাতপুর গ্রামে ফারজানা আক্তার বলেন ডিম থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে বিক্রি করলে একটি রাজহাঁস থেকে বছরে ৫থেকে ৬ হাজার টাকা আয় হয়। আর বড় করে ৫-৬মাস পর বিক্রি করে প্রতিটি হাঁস ১২শত থেকে ১৫শত টাকা বিক্রি করা যায়। বাচ্চা হাঁসকে ভাত, চালের কুড়া এবং ধান খেতে দেওয়া হয়। ৪ মাসে হাঁসের পিছনে খরচ হয় ১৬-২০হাজার টাকা খরচ হয়। আর বিক্রি হয় ৫০-৬০হাজার টাকা। জামালগঞ্জ সদর ইউনিয়নে কাশীপুর গ্রামে ছালেহা বেগম বলেন, পাশের গ্রাম থেকে প্রথমে ৪শত টাকায় ২টা হাঁসের (একটি মা ও একটি পুরুষ) বাচ্চা কিনে আনি। পাতি হাঁসের হাঁসের সঙ্গে রাজহাঁসগুলো বাড়তে থাকে। এগুলো ভাত ও চালের গুড়া সহ ঘাস খেতে ভালবাসে। ৬ মাস পর দেখি ১টি হাসঁ ডিম পাড়া শুরু করেছে। ১০টি ডিম হলে তা থেকে বাচ্চা ফুটিয়ে রাজহাঁসের খামার করেছি। বর্তমানে আমার খামারে ৩০টি হাঁস আছে। আরো ১৬টি হাঁস ২০ হাজার টাকায় বিক্রি করে দিয়েছি। সে আরো বলেন, পাশে মরা খাল থাকায় অনেক সুবিধা হয়েছে আমার। আমার দেখা-দেখি আরো ৮-১০জন রাজহাঁস পালন শুরু করেছে। একটি রাজহাঁস ১২শত থেকে ১৫শত টাকায় বিক্রি হয় এবং ২দিনের বাচ্চা প্রতিটি আড়াইশত টাকা বিক্রি হয়। জামালগঞ্জ উপজেলা পানি স¤পদ কর্মকর্তা ডা. আবুল কাশেম বলেন, রাজহাঁস পালনে খরচ কম ও বেশি লাভ হওয়ায় উপজেলার নারীরা রাজহাঁস পালনে আগ্রহী হচ্ছেন। উপজেলায় প্রায় ৬৬টি রাজহাঁসের পারিবারিক খামার রয়েছে। প্রতিটি খামারীকে মোবাইল নাম্বার দেওয়া আছে। কোন প্রয়োজন হলে তারা যেন আমাদেরকে জানায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে আমরা তাদের সমস্যা সমাধান করি।