স্টাফ রিপোর্টার::
গেল কয়েক বছর পর উৎসবমুখর পরিবেশে শাল্লায় বোর ধান গোলায় তুলেছে কৃষক। এবছর ধানের বা¤পার ফলনে আনন্দিত তারা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হাওরে ফসল উত্তোলন শেষে কৃষকের মাঝে উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। কৃষকরা ধান গোলায় তুলে গবাদি পশুর খাদ্য সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে। সুনামগঞ্জের দ্বীপ উপজেলা খ্যাত শাল্লা বর্ষায় পানিতে টইটুম্বুর থাকে।চতুর্দিকে পানি থাকায় এই অঞ্চলের কোথাও গবাদিপশু চড়ানোর জন্য ভাস্যমান ভূমি থাকেনা।যার কারণে গবাদিপশু বাড়িতে রেখেই লালন পালন করতে হয়। তাই গো-খাদ্য হিসেবে পরিচিত ধান গাছের কাটা অংশ রোদে শুকিয়ে হাওর থেকে বাড়িতে এনে পুঞ্জি(স্তুপ) দিয়ে রাখেন কৃষক। অন্যাতায় ভরা বর্ষায় গো-খাদ্য সংকটে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের।তাই গো-খাদ্যের সংকট মোকাবেলায় খড় সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে স্থানীয় কৃষক। সংগ্রহ করা এই খড় গবাদিপশুর খাবার হিসেবে বর্ষা মৌসুমের জন্য মজুদ রাখা হয়। সরজমিন উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা যায়,বেশ কয়েক বছর হওয়ার পরে এমন বৈশাখ আমরা দেখিনি।এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় হাওরের ধান দ্রুত গোলায় তুলতে সক্ষম হয়েছে। প্রতি বছর হাওরাঞ্চল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হয়।কিন্তু এ বছর স¤পূর্ণ ব্যতিক্রম ছিলো আবহাওয়া। তাই এ বছর বোর ধানের বা¤পার ফলনে আনন্দিত কৃষক। ধান কেটে, মাড়াই করে শুকিয়ে গোলায় তুলে এখন গো-খাদ্য সংগ্রহে ব্যস্ত সময় পার করছে তারা। স্থানীয় কৃষক আব্দুল আহাদ জানান,গত বছর হাওর ডুবি ও পরবর্তী ভয়াবহ বন্যার কারণে গো-খাদ্যের চরম সংকট দেখা দিয়েছিলো। আমি ৭ টি গরু নিয়ে বিপাকে পড়েছিলাম। পরে ১২ শ টাকা মন খড় কিনেতে হয়েছে। তাই এ বছর ধান তুলার পর সবাই খড় সংগ্রহে ব্যস্ত। এ বিষয়ে উপজেলার উজানগাঁও গ্রামের কৃষক রবিকুল মিয়া জানান,আমি এ বছর ১৫ কেয়ার (১ কেয়ার সমান ২৮ শতাংশ) জমিতে বোর ধান চাষ করেছি। আলহামদুলিল্লাহ বা¤পার ফলন হয়েছে।ধান শুকিয়ে গোলায় তুলা শেষ। বর্ষায় গরুর খাদ্যের জন্য খড় শুকিয়েও বাড়িতে নিয়ে এসেছি। আজকে আমি খড়ের পুঞ্জি(স্তুপ)দিয়েছি আত্মীয় স্বজন নিয়ে।দুপুরে সবাইকে নিয়ে উৎসবের সাথে খাওয়া-দাওয়া হবে। হাওরে এবছরে ধানের কাজ শেষ, এখন পানি আসলে মানুষ মাছ ধরে জীবিকানির্বাহ করবে। এব্যাপারে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.আবু তালেব জানান,এবছর বোর ধানের বা¤পার ফলন হয়েছো। শাল্লার হাওরেগুলোতে শতভাগ ধান কর্তন ও গো-খাদ্য সংগ্রহ শেষ। এবছর প্রায় ১০০ কোটি টাকার গো-খাদ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।