স্টাফ রিপোর্টার::
”শ্রমিক মালিক ভাই ভাই সোনার বাংলা গড়তে চাই” এই প্রতিপাদ্য নিয়ে সুনামগঞ্জে বর্ণ্যাঢ্য র্যালী ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গত সোমবার সকাল ১০টায় ইজিবাইক, রিক্সা, হোটেল ও দোকান শ্রমিক ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আয়োজনে শহরের পৌরচত্বর থেক্বে একটি র্যালী বের হয়ে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে কেন্দ্রীয় শহীদ মিণারে গিয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. সোহেল আহমদ এর সভাপতিত্বে ও ইজিবাইকের সাধারন সম্পাদক মো. আনোয়ার হোসেনের সঞ্চালনায় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন আওয়ামীলীগ নেতা ও পৌরসভার মেয়র নাদের বখত। সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন,দৈনিক সুনামগঞ্জের সম্পাদক ও প্রকাশক বিজন সেন রায়, বিশিষ্ঠ আইনজীবি এড.নজরুল ইসলাম, রিপোর্টাস ইউনিটির সভাপতি লতিফুর রহমান রাজু, জেলা ইজিবাইক এর সহ-সভাপতি মোছাদ্দিক আলী বাবলু, যুগ্ম সাধারন সম্পাদক নবিনুর, মো. হাফিজুর রহমান,অর্থ সম্পাদক বিপ্লব কান্তি তালুকদার, একে মিলন আহমদ, শ্রমিক নেতা শফিক মিয়া, মিন্টু মিয়া, শোয়েব আহমদ, রঞ্জিত পাল, নিখিল রায়, আব্দুল আলী,আব্দুর রউফ,আতাউর মিয়া প্রমুখ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পৌরসভার মেয়র নাদের বখত বলেছেন, মহান মে দিবস আন্তর্জাতিক শ্রমজীবি মানুষের অধিকার আদায়ের দিন। ১৮৮৬ সালের ঐদিনে আমেরিকার শিকগো শহরের হে মার্কেটের শ্রমিকরা তাদের ৮ ঘন্টা কাজের দাবীতে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচী চলাকালে পুলিশের গুলিতে বেশ কয়েকজন শ্রমিক নিহত হয়েছিলেন। ঐদিন থেকে মহান মে বিশ^ শ্রমিক দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তিনি বলেন,স্বাধীন বাংলার স্থপতি জাতির পিতার হাত ধরে ১৯৭১ সালে দেশের কৃষক,শ্রমিক,দিনমুজুরসহ বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহনের মাধ্যমে বাঙ্গালী জাতি একটি সার্বভৌমত্ব ভূখন্ড পেয়েছিলেন। তিনি বলেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু জাতিকে দুটিভাগে ভাগ করেছিলেন শোষনকারী ও শোষিত মানুষ,তবে বঙ্গবন্ধু সব সময়ই শোষিত মানুষের পক্ষে ছিলেন। কিন্তু স্বাধীনতা পরবর্তী কিছু বিপদগামি সেনা অফিসার ও স্বাধীনতা বিরোধীদের চত্রছায়ায় ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগষ্ট বঙ্গবন্ধুকে স্বপরিবারে হত্যার মধ্য দিয়ে এদেশে শোষন আর বঞ্চনার রাজনীতি শুরু হয়েছিল। কিন্তু জাতির পিতার সুযোগ্য উত্তরসূরী নামাজী আমলদার আজকের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথা আওয়ামীলীগ জনগনের প্রত্যক্ষ ভোটে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে প্রায় তিনযুগে দেশকে আজ উন্নয়নের মহাসড়কে রুপান্তরিত করে বিশে^ বাংলাদেশ একটি উন্নত ও সমৃদ্ধ দেশে পরিণত হয়েছে। দেশের মানুষ আজ অভূক্ত কেহ নেই সবাই দ”ুবেলা,দু”মুঠো ভাত খেতে পারছেন। বর্তমান শেখ হাসিনার সরকার সব সময়ই শ্রমিকদের কল্যাণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তিনি বিশ^ব্যাপী মহামারী করোনা ভাইরাসের কারণে এবং রাশিয়া ও ইউক্রেন যুদ্ধে গোঠা বিশ^ অর্থনৈতিক মন্দার কারণে অনেক দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা ক্ষতির সম্মুখীন হলেও শেখ হাসিনার বলিষ্ঠ নেতৃত্বের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। তিনি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ায় নি¤œআয়ের মানুষদের নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করলে ও শ্রমিকদের আয় রোজগার ও জীবনমানের ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। তিনি শহরে ইজিবাইক শ্রমিক ও হোটেলের শ্রমিকদের ৮ ঘন্টা শ্রম নির্ধারন করার দাবী জানান,৮ ঘন্টার পরে যদি কোন শ্রমিক হোটেলে শ্রম দেন তাকে অভার টাইম হিসেবে বিবেচনায় নিয়ে শ্রমের মুজুরী পরিশোধ করার আহবান জানান। তিনি আরো বলেন যারা ইজিবাইকের মালিক রয়েছেন কম মুজুরীতে কোন শিশু শ্রমিককে ইজিবাইক চালাতে আনবেন না। মনে রাখতে হবে ১৮ বছরের কমবয়সী সবাই শিশু তাদের কাজে নিয়োজিত করলে সেটা হবে শিশু আইনে অপরাধ। তিনি ইজিবাইকের জন্য শীঘ্রই নিদিষ্ট একটি ভাড়ার তালিকা প্রণয়নে শ্রমিক নেতাদের আশ^স্থ করেন।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা শ্রমিক ঐক্য পরিষদের সভাপতি ও শ্রমিক নেতা মো. সোহেল আহমদ বলেছেন,শ্রমিকরা তাদের হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম ও রক্তঝড়া ঘামের কারণে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রয়েছে। কিন্তু শ্রমিকরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্যাতিত হচ্ছেন। তিনি শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবী বাস্তবায়নে পৌর পিতা নাদের বখত,জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের সুদৃষ্টি কামনা করেন। তিনি আরো বলেন এই শহরে ব্যাটারী চালিত রিক্সা লাইসেন্স ছাড়া অবৈধভাবে চলছে তাদের বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহনের দাবী জানান।