জামিউল ইসলাম তুরান,শান্তিগঞ্জ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলা থেকে সহজে পার্শ্ববর্তী উপজেলা দিরাই ও জামালগঞ্জ যাতায়াত করতে কালনী নদীর উপর প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নোয়াখালী-জামলাবাজ সেতু নির্মিত হয়েছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তত্ববধানে ১৬০ মিটার র্দীঘ সেতু দুইপাড়ের মানুষকে সংযুক্ত করেছে। তবে সেতুর দুইপাশে সড়ক না থাকায় এর সুফল পাবে না এলাকাবাসী। এজন্য জামলাবাজ গ্রাম হয়ে উজানীগাঁও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কি.মি সড়ক নির্মাণ করতে হবে। সেতুটি নির্মাণের ফলে উপজেলার পূর্ব-পশ্চিমকে জয়কলস ও পাথারিয়া ইউনিয়নের মধ্যদিয়ে প্রবাহিত কালনী নদী বিভক্ত করে রেখেছে। এই এই সেতু নির্মানের ফলে পশ্চিম পাড়ের মানুয়ের অন্তত ২০ কিমি রাস্তা কমবে উপজেলা সদরে আসার ক্ষেত্রে, তেমনিভাবে পূরর্বাঞ্চলের মানুষেরও যাতায়াত সহজ হবে। কিন্তু এই সড়ক নির্মিত না হলে ভাটি অঞ্চলের মানুষের স্বপ্ন পুরণ হবে না। এলাকাবাসী বলছেন, পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপির প্রচেষ্টায় এই বৃহৎ উন্নয়ন সম্ভব হয়েছে। আমরা চাই উনার সরকারের সময়কালে যেনো এই সড়ক ১২ মাসের চলাচল উপযোগী করে নির্মাণ করা হয়। সরেজমিনে দেখা যায়, উজানীগাঁও বাসস্ট্যান্ড হয়ে জয়কলস ইউনিয়ন পরিষদের সামনে দিয়ে ফতেপুর, মির্জাপুর, হাসনাবাজ, জামলাবাজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কি.মি. সড়ক আছে। এরমধ্যে ফতেপুর, মির্জাপুর থেকে উজানীগাঁও গ্রাম পর্যন্ত রয়েছে ডুবু সড়ক। মির্জাপুর থেকে জামলাবাজ ব্রিজ পর্যন্ত একেবারেই সরু, সড়কের বেশির ভাগ অংশই ভাঙা। সড়ক দিয়ে কোন ধরণের যানবাহন যাতায়াত করতে পারে না, হেঁটে চলাচল করেন মানুষজন। এদিকে নোয়াখালী-জামলাবাজ সেতুর প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ স¤পন্ন হয়েছে। দুই পাশের এপ্রোচেরও কাজ প্রায় শেষ, শুধু এপ্রোচের অংশে কার্পেটিং বাকি। সেতুর নির্মাণ পরবর্তী সাড়ে ৬ কি.মি. সড়ক নির্মাণ করা হলে মাত্র ১৫ মিনিটে উপজেলা সদরে যাওয়া সম্ভব হব। অন্তত ২৫ কিলো মিটার রাস্তা কমবে। এ ব্রিজটি নির্মাণ কাজ শেষ হলে ঐ এলাকার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ অতি সহজেই অল্প সময় ও অল্প টাকা ব্যয় করে জামলাবাজ-উজানীগাঁও-জয়কলস রাস্তা দিয়ে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা সদর হয়ে সিলেট তথা যে কোন গন্তব্যে চলে যত পারবেন। জামলাবাজ গ্রামের সুহেল আহমদ জানান, আমাদের গ্রামের ভেতর দিয়ে যে সড়ক উজানীগাঁও গেছে, সেই সড়ক চলাচল অনুপযোগী। সরকারের কাছে আমাদের দাবি স্থায়ী সড়কের। জামালাবাজ গ্রামের বাসিন্দা সাবেক ইউপি সদস্য নুর আহমদ জানান, নোয়াখালী-জামলাবাজ ব্রিজের পূর্ব পাশে জামলাবাজের পূর্বদিক হয়ে মির্জাপুর-ফতেপুর থেকে উজানীগাঁও সিলেট-সুনামগঞ্জ মহাসড়ক পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কিলোমিটার সড়ক স্থায়ীভাবে নির্মিত হলে সেতু জনগণের কাজে আসবে। দিরাই ও জামালগঞ্জ উপজেলার মানুষ দ্রুত সময়ে আমাদের এই ব্রিজটি ব্যবহার করে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারবেন। সেই সাথে আমরাও সহজে উপজেলা সদরে যেতে পারবো। জয়কলস ইউনিয়ন পরিসদের চেয়ারম্যান আব্দুল বাছিত সুজন জানান, আমাদের স্বপ্নের সেতু পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি মহোদয়ের প্রচেষ্টায় নির্মাণ হয়েছে। আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এখন আমাদের সড়কের প্রয়োজন। উজানীগাঁও পয়েন্ট থেকে নোয়াখালী-জামলাবাজ পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৬ কি.মি সড়ক স্থায়ীভাবে নির্মাণ করা না গেলে স্বপ্ন বাস্তবায়নে পূর্ণতা পাবে না। সড়ক হলে দিরাই-জামালগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জ উপজেলার মানুষের যোগাযোগের নতুন মাইলফলক হবে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল-নুর তারেক জানান, ব্রিজটি আমরা দ্রুত সময়েই বাস্তবায়ন করেছি। তবে এই ব্রিজের জন্য এখন আরও ৬.৫০ কি.মি. সড়ক প্রয়োজন। অন্যদিকে ব্রিজের পশ্চিম পাশে নোয়াখালী-ভীমখালী সড়কটি ৯ কি.মি ৭৫০ মিটার পর্যন্ত ভাসমান স্থায়ী সড়ক রয়েছে। ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোর রোড নেটওয়ার্ক এর আওতায় আমরা এই সড়ক উজানীগাঁও পয়েন্ট থেকে নোয়াখালী-জামলাবাজ ব্রিজ হয়ে একেবারে জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী পর্যন্ত সাড়ে ১৫ কি.মি. সড়কের প্রস্তাবনা দিয়ে রেখেছি। যদি এই প্রকল্পটি মন্ত্রণালয় থেকে পাস হয়ে আসে, তাহলে এই এলাকার মানুষের যাতায়াতের নতুন দিগন্ত উন্মোচন হবে। অতি সহজেই উজানীগাঁও পয়েন্ট থেকে নোয়াখালী-জামলাবাজ সেতু হয়ে দিরাই অথবা জামালগঞ্জ উপজেলার ভীমখালী হয়ে জামালগঞ্জ পৌঁছা যাবে।