জগন্নাথপুর প্রতিনিধি:
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে জোরপূর্বক যুক্তরাজ্য প্রবাসীর বসত বাড়ি দখল ও চাঁদা দাবির অভিযোগ উঠেছে অবসরপ্রাপ্ত কাস্টম কর্মকর্তা আবু লেইছ মিয়ার বিরুদ্ধে। তবে তিনি তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। জানা গেছে, জগন্নাথপুর পৌরসভার হবিবপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত মনাফর আলী ওরফে সফর আলীর উতরাধিকারীরা অধিকাংশই যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। এদের মধ্যে অনেকে আবার কিছু দিন পরপর দেশে বেড়াতে আসেন। গত ১৬ এপ্রিল সফর আলীর বড় ছেলে মৃত জবর আলীর মেয়ে শিবলী বেগম যুক্তরাজ্য থেকে দেশে বেড়াতে আসেন এবং দাদার বাড়িতে উঠেন। গত ২৮ এপ্রিল পৌরসভার ইসহাকপুর এলাকার মৃত এখলাছুর রহমানের ছেলে অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস সুপারেন্টেন্ড আবু লেইছ নেতৃত্বে হবিবপুর পশ্চিমপাড়া এলাকার মৃত সফিক মিয়ার ছেলে আজিদ মিয়াসহ বেশকয়েক জন দিনেদুপুরে ওই বাড়িতে হামলা চালিয়ে যুক্তরাজ্য প্রবাসী শিবলী বেগমের কাছে চাঁদা দাবী করেন। এসময় চাঁদা না পেলে স্বর্ণালংকার ও নগদ টাকা লুট করে নিয়ে যান। এঘটনায় গত ২ মে বাড়ির মালিক যুক্তরাজ্য প্রবাসী শিবলী বেগমের চাচাত বোন রাশিদা বেগম বাদী হয়ে দু’জনের নামে সুনামগঞ্জ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে লুটপাট ও চাঁদাবাজির মামলা করেন। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে জগন্নাথপুর থানা পুলিশকে তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য নির্দেশ দেন। মামলার বাদী রাশিদা বেগম বলেন, ভূমিখেকো আবু লেইছ আমাদের দাদার এ বাড়িটি দখলের জন্য দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টা করছে। ঘটনার দিন তারা আমার প্রবাসী বোনের ৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ দুই লাখ টাকা নিয়ে যায়। পরে আমাদের অনুপস্থিতিতে আবু লেইছ তার বাহিনী নিয়ে এসে বাড়িটি তালা দিয়ে যায়। বর্তমানে বাড়িটি তার দখলে রয়েছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী শিবলী বেগম বলেন, দেশে আসার পর আবু লেইছ আমার কাছে কয়েক বার ৫ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না পেয়ে সে আমাদের বাড়িটিতে তালা দিয়ে রেখেছে। এটি আমাদের দাদার রেখে যাওয়া স্মৃতি। দাদার এ সম্পত্তি আমাদের মধ্যে ভাগবাটোয়ারা হয়নি। আমরা সবাই লন্ডনে থাকি। বাড়িটি আমার বড় ভাই আব্দুল নুর দেখাশুনা করতেন। আমরাও দেশে আসলে এ বাড়িতে থাকি। তিনি মারা যাওয়ার পর বাড়িটি তালাবন্ধ থাকে। সেই সুযোগে বাড়িটি দখলের জন্য আবু লেইছ দীর্ঘদিন ধরে চেষ্টায় রয়েছে। ব্যাপারে অভিযুক্ত অবসরপ্রাপ্ত কাস্টমস সুপারেন্টেন্ড আবু লেইছের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এ বাড়িটি আমার বোন জামাই আব্দুল নুরের। সে ও আমার বোন । ভাগনা-ভাগনি তারা সবাই দেশের বাহিরে থাকেন। তাঁদের কথায় মাঝেমধ্যে ওই বাড়িতে যাই। আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হচছে। যারা অভিযোগ করেছেন তারা বাড়িটি দখল করতে চায়। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জগন্নাথপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শামছুল আরেফিন বলেন, বর্তমানে মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে। তদন্ত কাজ শেষে প্রতিবেদন আদালতে দাখিল করা হবে।