শাল্লা প্রতিনিধি::
চলতি বোর মৌসুমে সুনামগঞ্জ জেলার শাল্লা উপজেলায় ধান গোলায় তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছে কৃষক-কৃষাণীরা। ইতোমধ্যে ধান কাটা শেষ করেছেন অনেক কৃষক। এখন সেই ধান রাত জেগে সিদ্ধ করে সকাল থেকে শুকানোর কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। রাত-দিন পরিশ্রম করেও যেন ক্লান্তি নেই তাদের। নিজ ক্ষেতের ধান গোলায় তোলার আনন্দে ভাসছেন তারা। মঙ্গলবার উপজেলার উজানগাঁও, শশারকান্দা,দৌলতপুর, দাউদপুরসহ কয়েকটি গ্রামে ঘুরে দেখা যায়,কৃষাণ-কৃষাণীরা রাতের আধারে বাড়ির উঠানে,ধানের খলায়(ধান শুকানোর মাঠ)ধান সিদ্ধ করছে। কৃষাণীরা সারাদিন ধান শুকানোর কাজে ব্যস্ত থাকলেও রাতে সিদ্ধ কাজেও সময় দিচ্ছে। এদিকে কৃষকরা সারা দিন হাওরে ধান কেটে মাড়াই করে বাড়িতে কিংবা খলায় নিয়ে আসে। রাতে তারা ধান সিদ্ধ করতে কাজ করছে। কৃষাণ-কৃষাণীদের সাথে শিশু কিশোররাও আনন্দ নিয়ে কাজ করছে। এই নবান্ন উৎসব, ইদের আনন্দের সাথে একাকার হয়ে অন্যরকম উৎসবের সৃষ্টি হয়েছে। দিনের বেলা সিদ্ধ করা ধান টুকরি দিয়ে মাঠে কিংবা উঠানে ঢেলে শুকানো হচ্ছে। কৃষাণীরা রোদে শুকাতে দেয়া ধান পা দিয়ে নাড়া দিচ্ছেন। বৈশাখের তপ্ত রোদে বারবার ধানে পা নাড়া দিচ্ছেন কৃষাণীরা। যত বেশি ধানে পা নাড়া দিবেন ততই তাড়াতাড়ি শুকাবে ধান। কৃষাণ-কৃষাণীদের কাজের গতি দেখে মনে হয় কোনো ক্লান্তি নেই তাদের। কেন না আগামী বোরো মৌসুম পর্যন্ত তাদের খাদ্য যোগান দেবে এই ধান। কৃষণী হাবিবা আক্তার ও আছিয়া আক্তার বলেন,বোর ধান কাটা-মাড়াই হয়ে গেছে। ধান ইতোমধ্যে গোলায় তুলেছি। খাদ্যের জন্য ছয় মাসের চাল তৈরি করতে হবে। তাই সন্ধ্যা রাত থেকে ধান সিদ্ধ করেছি। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়,শহরে চাকুরী করা কৃষক সন্তান জহিরুল ইসলাম ও তার ভাই আনোয়ার হোসেনকে সাথে নিয়ে রাতে ধান সিদ্ধ করছেন। তিনি জানান এবছর হাওরে বা¤পার ফলন হয়েছে। ঈদে ছুটিতে এসেছি তাই পরিবারের কাজে সহযোগিতা করছি। আমাদের ধান কাটা শেষ। কিছু ধান শুকিয়ে গোলায় তুলেছি। আগামী ছয় মাসের খাদ্যের যোগান হিসেবে ধান সিদ্ধ করছি। সেগুলো শুকিয়ে চাল করে রেখে দেব। আগামী ছয় মাস আলহামদুলিল্লাহ ভাতের চিন্তা করা লাগবে না। আগামী বোর মৌসুম পর্যন্ত আমাদের খাদ্যের যোগান হয়েছে। এবিষয়ে শাল্লা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মু.আবু তালেব জানান,এখানকার কৃষাণ-কৃষাণীরা রাত দিন পরিশ্রম করেছে।দিনে হাওররে ধান কাটা,মাঠে ধান শুকাতে ব্যস্ত থাকলেও রাতে তারা ধান সিদ্ধ করতে দেখা যায়।ইতোমধ্যে আমাদের ধান কর্তন হয়েছে প্রায় ৮৮ ভাগ।আশা করছি আগামী ৩০ তারিখের মধ্যে শতভাগ ধান কর্তন করা যাবে। উল্লেখ্য সুনামগঞ্জ জেলায় ২ লাখ ২২ হাজার হেক্টর জমিতে বোরধান চাষাবাদ হয়েছে। শাল্লা উপজেলায় ৬ টি হাওরে ২২ হাজার হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে।উৎপাদিত ধানের চালের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ১ লাখ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজারদর সাড়ে তিনশত কোটি টাকা।