ছাতক প্রতিনিধি ::
১১ কোটি ৬০ লাখ টাকার বরাদ্ধ এ নির্মাণ কাজে ঝং ধরা রডসহ নি¤œমানের বালি ও পাথর ব্যবহার করে কাজ করার অভিযোগ উঠেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। ছাতক উপজেলায় এক মাত্র মডেল মসজিদ নির্মাণ করতে প্রায় তিন বছর নানা অজুহাত দেখায়ে অতিবাহিত করেছেন ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। কাজ চলছে ধীরগতিতে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ। এ কাজে নানা অনিয়ম দুনীতির অভিযাগ উঠেছে। সম্প্রতি পাইলিং ব্র্যাইজ নির্মাণ শেষে বন্ধ হয়ে যায় কাজ। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর গত ১২ অক্টোবর থেকে নির্মাণ কাজ আবারও শুরু করেছে। জানা যায়, ছাতক উপজেলায় একমাত্র মডেল মসজিদ নির্মাণের জন্য ২০১৮-২০১৯ অর্থ বছরে প্রকল্প বরাদ্দ হয়। কাজটি পায় রাজধানী ঢাকার বিশ্বাস বিল্ডিং কন্সট্রাক্টশন নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। গণপূর্ত মন্ত্রনালয়ের অর্থায়নে এটির ব্যয় ধরা হয় ১১ কোটি ৬০ লাখ টাকা। এরপর পুরাতন মসজিদসহ অন্যান্য স্থাপনা ভেঙে মসজিদের পুকুরটি ভরাট করা হয়। মুসল্লিদের নামাজের জন্য উপজেলা পরিষদ মাঠে অস্থায়ী ভাবে টিনসেডের একটি মসজিদ নির্মাণ করে দেয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরে তিন তলা বিশিষ্ট মডেল মসজিদ নির্মাণে শুরু হয় নির্মাণ কাজ। পাইলিং, ব্র্যাইজ ডালাইয়ের কিছু দিন কাজ করার পর ড্রয়িং সমস্যা দেখা দেয়। এর মধ্যে নির্মাণের জন্য বেধে দেয়া সময় অতিবাহিত হয়ে যায়। ২০২০ সালের শুরুতে করোনা, লকডাউন ও পরবর্তীতে দুই দফা বন্যার কারণ দেখিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকে মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ। এদিকে, করোনা, লকডাউন ও বন্যার কারণে দীর্ঘ সময় ধরে কার্যক্রম বন্ধ থাকায় লিন্টারগুলোর রডে ঝং ধরে লালছে রঙ ধারণ করে। পাশে স্তুপ করে রাখা রডগুলোরও একই অবস্থা। এসব রড দিয়ে কাজ করা হলে স্থাপনায় অনেক ঝুঁকি থাকবে এমনটাই আশঙ্কা করছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। টেকসই কাজ নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। বন্যা পরবর্তী সময়ে বালি দিয়ে ভরাট করে গত ১২ অক্টোবর থেকে আবারও নির্মাণ কাজ শুরু হয়। নির্মাণ কাজে সময় বৃদ্ধির জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একটি আবেদনও করেছেন। অবশেষে ৩১ জুলাই ২০২৩ সালের মধ্যে মডেল মসজিদ ভবনটি নির্মাণের জন্য তাদেরকে তাগিদ দেয়া হয়েছে। বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের ছাতক উপজেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পের এডমিন অফিসার সোমেল হোসেন জানান, ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বরাদ্দ হলেও আমরা কাজ বুঝে পাই ২০২১ এর জুন মাসে। এর মধ্যে করোনা, লকডাউন তার পর দুই দফা বন্যা, পাথর সংকটসহ ড্রয়িং সমস্যা ছিল। বন্যা পরবর্তী সময়ে বালি ভরাটের পর গত ১২ অক্টোবরে ফের নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ২০২৩ সালের ৩১ জুনের মধ্যে কাজ স¤পন্ন করে মডেল মসজিদ ভবনটি হস্তান্তরের চেষ্টায় কাজ চলছে। রডে ঝং ধরা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রডের কার্বনগুলো ছাড়িয়ে আমরা কাজ করছি। নি¤œমানের বালির কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, এখানের যিনি বালি দিচ্ছেন তাকে আমরা নিষেধ করেছি। বলেছি এমন বালি দিয়ে আমরা কাজ করব না। বিশ্বাস বিল্ডার্স লিমিটেডের ছাতক মডেল মসজিদ প্রকল্পের প্রজেক্ট ইঞ্জিনিয়ার মহসিন মীর বলেন, অতিবৃষ্টি, ভয়াবহ বন্যা, করোনা, লকডাউন, সার্ট ডাউনসহ প্রাকৃতিক সমস্যায় দীর্ঘদিন কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বন্যায় ৩৪৫ বস্তা সিমেন্টসহ স্ট্রিলের সাটারিং নষ্ট হয়েছে। এতে আমাদের অনেক টাকার ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া নির্মাণ সামগ্রীর লাগামহীন মূল্যবৃদ্ধির পরও আমরা ফের কার্যক্রম শুরু করেছি।