নির্বাচনী দায়িত্ব পালন শেষেও পাননি ভাতা, ক্ষুব্ধ দায়িত্ব পালনকারীরা

২১ লাখ ২২ হাজার টাকা থেকে বঞ্চিত কর্মকর্তারা

স্টাফ রিপোর্টার::
সুনামগঞ্জ-১ (জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও মধ্যনগর) আসনের তাহিরপুর উপজেলায় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী দায়িত্ব পালনকারী দেড় হাজারের বেশি কর্মকর্তা পাননি যাতায়াত ভাতা। অথচ তাদের কাছ থেকে যাতায়াত ভাতার মাস্টাররোলে সই নেওয়া হয়েছে। গতকাল সোমবার ভুক্তভোগী একাধিক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে এ নিয়ে ক্ষুদ্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

তাহিরপুর উপজেলায় ৫৩টি ভোটকেন্দ্রে ১ হাজার ৬১ জন প্রিসাইডিং, সহকারী প্রিসাইডিং ও পোলিং কর্মকর্তা বিভিন্ন দায়িত্ব পালন করেছেন। কাজের সূত্রে দুর্গম ও হাওরাঞ্চলে যাতায়াত ভাড়া বাবদ জনপ্রতি দুই হাজার টাকা সম্মানী দেওয়ার কথা। ধর্মপাশ্য ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় দায়িত্ব পালনকারীরা এ টাকা পেলেও বঞ্চিত হয়েছেন তাহিরপুরের কর্মরতরা। বিষয়টি নিয়ে একাধিক কর্মকর্তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন।

সহকারী প্রিসাইডিং কর্মকর্তা মুকসেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দীপঙ্কর ভট্টাচার্য কাঞ্চ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লিখেছেন, ‘তাহিরপুরে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী শিক্ষক-কর্মচারী কেউ কি যাতায়াত ভাতা পেয়েছেন?’ উত্তরে তাহিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক রণদা গাঙ্গুলি লিখেছেন, ‘না কেউ পায়নি। তবে বিশ্বম্ভরপুর পেয়েছে।

লাউড়েরগড় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহাদাৎ হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘ফাঁকা কাগজে আমাদের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। কিন্তু যাতায়াত ভাড়া দেওয়া হয়নি। এখন আর টাকা চাই না। তবে এ ধরনের জালিয়াতি দূঃখজনক।’ একইভাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেন বারুঙ্কা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চক্রবর্তী।

অভিযোগের বিষয়ে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ও বাদাঘাট সরকারি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক মৃদুল কান্তি কর জানান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ফাঁকা ভাউচারে নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের কাছ থেকে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে।

উপজেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সভাপতি অজয় কুমার দে বলেন, যাতায়াতের জন্য দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তাহিরপুর ও মধ্যনগরের ১৫৭৩ কর্মকর্তার ক্ষোভ নির্বাচনী দায়িত্ব পালনের সময় যাতায়াত ভাতার মাস্টাররোলে সই নেওয়া হয় জনপ্রতি দুই হাজার টাকা দেওয়ার কথা চিঠিতে উল্লেখ ছিল। কিন্তু তাহিরপুরে কাউকেই এ টাকা দেওয়া হয়নি। বিষয়টি দুঃখজনক।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সালমা পারভিন বলেন, বিধি অনুযায়ী নির্বাচনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মকর্তাদের সম্মানী ভাতা দেওয়া হয়েছে। তবে বরাদ্দ না থাকায় যাতায়াত ভাড়া দেওয়া যায়নি। ফাঁকা কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, সেটি ছিল অপ্রয়োজনীয় যানবাহনের মাষ্টার রোল। ভুলবশত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সরবরাহ করা হয়েছে। অনাকাঙ্ক্ষিত এমন ভুলের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তা।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ