স্টাফ রিপোর্টার::
বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়কের বেহাল দশার কারণে ভোগান্তিতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ। ফতেপুর বাজার থেকে তাহিরপুর উপজেলার আনোয়ার পর্যন্ত প্রায় ৭ কিলোমিটার রাস্তার বেহাল দশার ফলে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চলাচলকারীরা। প্রতিনিয়ত জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছেন পথচারিরা। এই সড়কটি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন পথচারিরাসহ স্থানীয়রা। স্থানীয়রা জানান, জেলা সদরের সঙ্গে ধর্মপাশা, তাহিরপুর ও মধ্যনগরসহ ভাটি অঞ্চলের যোগাযোগ পথ কমাতে বাইপাস যাতায়াত সড়ক হিসাবে ব্যবহার করে আসছেন এই সড়কটি। নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়কেই বেশি চলাচল করেন ভাটি অঞ্চলের বাসিন্দারা। এই সড়ক দিয়ে লাখো মানুষের যোগাযোগ রক্ষাকারী গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটির এখন বেহাল দশা। এই সড়ক পরিণত হয়েছে এখন মরণফাঁদে। এছাড়া সদর উপজেলার গৌরারং, জামালগঞ্জ উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নসহ আশপাশের লোকজনও সহজে বিশ্বম্ভরপুর ও তাহিরপুরে যাতায়াত করেন এই সড়ক দিয়ে। সরেজমিনে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে সড়কের সংস্কার কাজ না হওয়ায় সড়কের স্থানে স্থানে পিচ-ঢালাই উঠে গেছে। এই মৌসুমে বৃষ্টিপাত হওয়ার ফলে রাস্তার সৃষ্টি হওয়া গর্তে কাঁদা পানিতে চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ২০২২ সালের বন্যায় সড়কের বারোঙ্কা এলাকায় সড়ক ভেঙ্গে নালার মত সৃষ্টি হয়েছে। ফলে বর্ষাকালে এখানে খেয়া নৌকা দিয়ে পারাপার হতে হয়। বেশ কয়েকটি ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি সরে গেছে। ফলে ব্রিজগুলেও রয়েছে হুমকির মুখে। অধিকাংশ ব্রিজের গোড়া থেকে মাটি সরে যাওয়ার ফলে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি নিয়ে উটতে হয়। ২০২২ সালের বন্যার পর আর এই সড়কে কোন কাজ হয়নি বললেই চলে। ফতেপুর ইউপির রঙ্গারচর গ্রামের ইসলাম উদ্দিন বলেন, সড়কটি অনেক দিন আগেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। শুকনো মৌসুমে গাড়ি চলার সময় ধুলোবালির আর উঁচু নিচুতে বড় ধরনের ঝাকির অত্যাচার সয়ে চলাচল করতে হয়। এখন প্রতিদিনই বৃষ্টিপাত হচ্ছে ফলে এ সড়ক দিয়ে যোগাযোগ করা ঝুঁঁকিপূর্ণ। এমন ভাঙা রাস্তা দিয়ে আমাদের সবসময়ই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলতে হয়। বন্যার পর আর কর্তৃপক্ষ এই সড়কে কোন কাজ করেনি। রহমত উল্লাহ নামের এক মোটরসাইকেল চালক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কটির অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে সড়ক দিয়ে চলাচল করতে খুবই কষ্ট হচ্ছে আর বৃষ্টির মৌসুমে এই সড়কের গর্তে মোটরসাইকেল উল্টে দুর্ঘটনা ঘটে। সুনামগঞ্জ সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগ সুত্রে জানাযায়, আবুয়া নদীর উপরে নির্মিত ব্রিজটির কাজও প্রায় শেষ। চলতি বছরেই ব্রিজটি উদ্ভোধন করা হবে। এই ব্রিজ দিয়ে চলাচল শুরু হলে এই সড়ক দিয়ে প্রতিদিনি প্রায় লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করবেন বলে মনে করছেন এখানকার মানুষজনেরা। তাই দ্রুত এই সড়কটি সংস্কার করে চলাচলের উপযোগি করার দাবি জানিয়েন এলাকাবাসী। সাতগাঁও গ্রামের আলমগীর হোসেন বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এ সড়কের বেহাল অবস্থা। কিন্তু সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় বিভিন্ন স্থানে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। ফতেপুর ইউনিয়নে অধিকাংশ গ্রামেরই রোগি নিয়ে আনোয়ারপুর বাজার বা তাহিরপুর উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে যেতে হয়। রাস্তার এমন বেহাল অবস্থার কারণে রোগি নিয়ে তাহিরপুর যেতে খুব বেশি কষ্ট করতে হয়। এখানকার মানুষের এই ভোগান্তির কথা চিন্তা করে এই সড়কটি দ্রুত সংস্কার করার প্রয়োজন। এ ব্যাপারে সুনামগঞ্জের সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল ইসলাম প্রামানিক বলেন, নিয়ামতপুর-আনোয়ারপুর সড়কের জন্য ২৫ কোটি টাকার টেন্ডার হয়েছে। দরপত্র মূল্যায়নের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে জানান তিনি। দরপত্র মূল্যায়ন হয়ে আসলেই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু হবে।