তাহিরপুরে ড্রেজারে বালু দিয়ে হাওররক্ষা বাঁধ নির্মাণ

শওকত হাসান, তাহিরপুর ঃ-
তাহিরপুরে মাটির পরিবর্তে নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু দিয়ে হাওরের ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামতের কাজ স¤পন্ন করা হচ্ছে। মঙ্গলবার সরজমিন পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নীতিমালা অনুযায়ী বালু দিয়ে বাঁধ মেরামতের নিয়ম না থাকলেও মাটিয়ান হাওর উপ প্রকল্প নামক ৭৫ নং পিআইসি’র ফসলরক্ষা বাঁধ মেরামত কাজে মাটির পরিবর্তে নদী থেকে ড্রেজার মেশিনের মাধ্যমে বালু দিয়ে কাজ স¤পন্ন করা হচ্ছে। এছাড়াও ৭৬ ও ৭৭নং পিআইসির বাঁধেও বালু দিয়েই কাজ করছে সংশ্লিষ্ট পিআইসি কমিটির লোকজন। পাউবোর সূত্রে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে তাহিরপুর উপজেলায় ছোট-বড় ২৩টি হাওরে ১১২টি প্রকল্পের মধ্যে ৮৪ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণে ২০ কোটি ৮৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়। তার মধ্যে পাউবো’র অধীনে থাকা মাটিয়ান হাওরের ৭৫নং পিআইসির বাঁধটি মেরামতের জন্য ৭০লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, যেভাবে বাঁধের কাজ মাটি দিয়ে করানো হচ্ছে তাতে ভারি বৃষ্টিপাত হলে এক মাসেও বাঁধ টিকবে না। এছাড়াও মাটির পরিবর্তে এভাবে বালু ফেলে বাঁধ মেরামত কাজ করা হলে চৈত্র মাসের প্রথম দিকেই উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির তোরে আগাম ফসলহানীর আশংকা রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাওরপাড়ের কৃষক বলেন, ৭৫নং পিআইসির বাঁধটি শুরু থেকেই বালু দিয়ে মেরামত না করার জন্য বলেছি। কিন্তু বাঁধের দায়িত্বশীলরা অনুমিত নিয়েই নাকি বাঁধের কাজ করছেন বলে আমাদের জানান। নদী থেকে ড্রেজারের মাধ্যমে সহজে বালু দিয়ে বাঁধের নামে সরকারের টাকা লুটপাট করা হচ্ছে। এবিষয়ে ৭৫নং পিআইসির সভাপতি মলাই মিয়া ও সেক্রেটারি বলেন, পাউবোর উপ সহকারী প্রকৌশলী শওকত উজ্জমানের অনুমিত নিয়েই বালু দিয়ে বাঁধের কাজ করা হচ্ছে। আমাদের মতে মাটির চেয়ে বালু দিয়ে বাঁধের কাজ খুবই টেকসই হবে। ড্রেজারের বালু শক্ত ভাবে মাটিতে বসে যায়। তবে এবিষয়ে পাউবো’র উপ সহকারী প্রকৌশলী শওকত উজ্জমান বলেন, ৭৫নং পিআইসির কাজ নদীতে থাকা পানির লেভেল পর্যন্ত ড্রেজার দিয়ে করার কথা। তবে স¤পূর্ণ বাঁধ বালু দিয়ে করতে বলা হয়নি। এছাড়াও যেসব বাঁধ বালু দিয়ে করার অভিযোগ পেয়েছি সেই সব বাঁধে পরিদর্শনে যাচ্ছি। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য রমেন্দ্র নারায়ন বৈশাখ বলেন, বালু দিয়ে বাঁধ নির্মানের কোন বিধান নেই। বালু দিয়ে বাঁধ নির্মান করলে বৃষ্টির পানিতেই বাঁধ ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদি কেউ বালু দিয়ে বাঁধের কাজ করে তাহলে তা অনিয়ম করছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুপ্রভাত চাকমা বলেন, বালু দিয়ে বাঁধ মেরামত করা যাবেনা, ৭৫ নং পিআইসি ড্রেজার দিয়ে বাঁধ নির্মানে অভিযোগ পেয়েছি। এবং সংশ্লিষ্ট পিআইসির সভাপতিকে ড্রেজার বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি।

নিউজটি শেয়ার করুনঃ