জামিউল ইসলাম তুরান, শান্তিগঞ্জ ::
শান্তিগঞ্জ উপজেলার শিমুলবাক ইউনিয়নের চলাচলের একমাত্র সড়ক নোয়াখালী-ভীমখালী সড়ক। সড়কটি ব্যবহার করে শান্তিগঞ্জের মানুষ সহজে পার্শ্ববর্তী উপজেলার জামালগঞ্জ পৌঁছতে পারেন। কিন্তু গেল বন্যার পর থেকে সড়ক দিয়ে যান চলাচল অনেকটাই কমে গেছে। বন্যার পানির স্রোতে সাড়ে ৯ কি.মি. সড়কের ২১ জায়গায় ভাঙন ও খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। একারণে এলাকাবাসী পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। যান চলাচল করছে ঝুঁকি নিয়ে। সড়কটি দ্রুত মেরামত না করলে আগামী বর্ষা মৌসুমে ভয়াবহ ক্ষতি হবে। সরেজমিনে দেখা যায়, নোয়াখালী-ভীমখালী সড়কের তেরহাল গ্রামের শুরুতেই সড়কের অনেক জায়গা বন্যার পানিতে একেবারেই ভেঙে গেছে। এখানে ৩টি ভাঙায় প্রায় ১শ মিটার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তেরহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের আগে আরও দুটি স্থানে সড়কের কার্পেটিং উটে গেছে। তেরহাল-নুরপুর ব্রিজের দুই পাড়ে এপ্রোচ সড়কের প্রায় ১৫০ মিটার অংশে কার্পেটিং একেবারেই উঠে বড় বড় খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। নুরপুর নয়াহাটির মসজিদের আগে ও মসজিদের সামনে দুটি স্থানে সড়ক ভেঙেছে। একই সাথে জীবদাড়া বাজার পর্যন্ত কয়েক জায়গার কার্পেটিং উঠে খানাখন্দের সৃষ্টি হয়েছে। শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে উকারগাঁও গ্রামের সামনের ব্রিজের দুই পাশে বড় ধরণের ভাঙা রয়েছে। শিমুলবাক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভবনের সামনা থেকে মুক্তাখাই আলফাত উদ্দিন ব্রিজের আগে পর্যন্ত প্রায় ছয় অংশে সড়কের কার্পেটিং উঠে গেছে ও ভাঙন দেখা দিয়েছে। এভাবে সড়কের প্রায় ২১ জায়গায় ছোট বড় ভাঙা ও খানাখন্দ আছে। যত দিন যাচ্ছে ততই সড়কটি একেবারেই চলাচল অনুপযোগী হয়ে উঠছে। ইজিবাইক, লেগুলা, সিএনজি চালিত অটো-রিক্সা মারাত্মক ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে সড়কে। এলাকার দিলশাদ মিয়া, আব্দুল মতলিব, জুনাব আলী বললেন, বন্যার পানিতে আমাদের এই সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। অনেক জায়গায় বড় বড় ভাঙন তৈরি হয়েছে। একমাত্র সড়কটি চলাচল অনুপযোগী হয়ে আছে। সড়ক সংস্কার করে চলাচলের উপযোগী করে দেয়ার দাবি আমাদের। শিমুলবাক ইউনিয়ের আমরিয়া গ্রামের বাসিন্দা শান্তিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ স¤পাদক আতাউর রহমান বললেন, জামালগঞ্জ ও শান্তিগঞ্জের মানুষের যোগাযোগের একমাত্র সড়ক নোয়াখালী-ভীমখালী সড়ক। এই সড়কটি গত বন্যার সময় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ইউনিয়নবাসির চলাচলের অতিগুরুত্বপূর্ণ সড়ক এটি। মানুষজন এখন সড়ক দিয়ে স্বাভাবিকভাবে যাতায়াত করতে পারছেন না। চরম দুর্ভোগের মধ্যেদিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান এমপি মহোদয়ের সাথে এই সড়ক নিয়ে অনেকবার কথা হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন খুব দ্রুত এই সড়কের মেরামত করা হবে। শিমুলবাক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিনুর রহমান শাহিন জানান, ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়ক এটি। প্রতিদিন আমাকেও এই সড়ক দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে আসতে হয়। মারাত্মকভাবে ভেঙে গেছে সড়কের বেশিরভাগ অংশ। দীর্ঘদিন যাবৎ সড়ক ভাঙা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়েছে, সংস্কার করা হচ্ছে না। পুরো সড়কটিই বন্যার পানিতে ভেঙে গেছে। সড়ক দ্রুত সংস্কার না করা হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে আরও ক্ষয়ক্ষতি হবে। তখন জনসাধারণের চলাচল একেবারেই বন্ধ হয়ে যাবে। শান্তিগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী আল-নুর তারেক জানান, ২০২২ সালের বন্যায় এই সড়কের অনেক ক্ষতি হয়েছে। সড়কের ক্ষতির পরিমান নিরুপন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের কোর রোড নেটওয়ার্ক এর আওতায় মন্ত্রণালয়ে প্রস্তবনা পাঠিয়েছি। মন্ত্রণালয় থেকে প্রকল্পটি পাস হয়ে আসলেই টেন্ডর আহ্বান করে ঠিকাদার নিয়োগ করা যাবে। আশাকরি এই অর্থ বছরের মধ্যেই এই সড়কের সংস্কার কাজ শুরু করতে পারবো।